প্রশ্ন । বিবেকানন্দের মতে জীবাত্মার বন্ধন কীজন্য হয়ে থাকে ?
উত্তর : জীব অবিদ্যার কারণে সকাম কর্ম করে । সকাম কারণের জন্য জীবের সূক্ষ্ম দেহ স্থূল দেহে রূপান্তরিত হয় এবং সে জগতের বন্ধনে আবদ্ধ হয় । এটি জীবাত্মার বন্ধনের কারণ ।
প্রশ্ন । বিবেকানন্দের মতে , মােক্ষলাভের কয়টি পথ আছে ও কী কী ?
উত্তর : বিবেকানন্দের মতে মােক্ষলাভের তিনটি পথ আছে । যথা – কর্মযােগ , জ্ঞানযােগ , ভক্তিযােগ ।
প্রশ্ন । কর্মযােগ কী ?
উত্তর : কর্মযােগ হল কর্মের শৃঙ্খল । স্বামীজির মতে , কর্মযােগের দ্বারা বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে নিষ্কাম কর্ম করে মােক্ষ লাভ হয় ।
প্রশ্ন । জ্ঞানযােগ কী ?
উত্তর : জ্ঞানযােগ হল সেই পথ যে পথ , অনুসরণ করে যােগ সাধনার মাধ্যমে আত্মস্বরূপ জ্ঞানলাভ করলেই মােক্ষলাভ করা যায় ।
প্রশ্ন । ভক্তিযােগ কী ?
উত্তর : বিবেকানন্দের মতে , ভক্তিযােগ হল সেই পথ , যেখানে পরম পিতার পায়ে আত্মনিবেদন করে ঈশ্বরের করুণার ফলে মােক্ষলাভ সম্ভব ।
প্রশ্ন । নিষ্কাম কর্ম কী ?
উত্তর : ‘ নিষ্কাম ’ অর্থাৎ যাতে কামনা থাকে না । জগৎ ও জীবন সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করে , কামনা মুক্ত হয়ে অর্থাৎ রাগ , দ্বেষ , মােহমুক্ত হয়ে যে কর্ম করা হয় তাকেই নিষ্কাম কর্ম বলে । যেমন — -শিক্ষক হিসাবে ছাত্রদের শিক্ষাদান একটা নিষ্কাম কর্ম । নিষ্কাম কর্মকে গীতায় — ‘যজ্ঞার্থ কর্ম ’ বলা হয়েছে ।
প্রশ্ন । আমাদের সব কর্মের নিয়ন্ত্রণ কর্তা কে ?
উত্তর : আমাদের সব কর্মের নিয়ন্ত্রণ কর্তা স্বয়ং ঈশ্বর । গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন , আমরা কর্ম করতে পারি , কর্মে আমাদের অধিকার আছে । কিন্তু যেহেতু আমাদের কর্মের প্রকৃত কর্তা নাই । তাই কর্মফলের দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের কাজ করা উচিত নয় । যেমন — ছাত্র পরীক্ষা দেয় কিন্তু নিজে নিজেকে নম্বর দিতে পারে না , নম্বর দেন শিক্ষক ।
প্রশ্ন । কর্মযােগ গুণের ভিত্তিতে মানুষকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে ও কী কী ?
উত্তর : কর্মযােগে সত্ত্ব , রজ ও তমগুণের ভিত্তিতে মানুষকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে । তা হল ( ১ ) সাত্ত্বিক মানুষ , ( ২ ) রাজসিক মানুষ , ( ৩ ) তামসিক মানুষ ।
প্রশ্ন । বিবেকানন্দের মতে ধর্মের ঈশ্বর কে ?
উত্তর : বিবেকানন্দ মনে করতেন পরম পিতা বা ঈশ্বর জগতের সর্বত্র বিরাজমান , আত্মিক প্রচেষ্টায় সকল বস্তুতেই তিনি প্রত্যক্ষীভূত হতে পারেন । মানুষই ঈশ্বর । তাই প্রত্যক্ষীভূত ঈশ্বরকে বাদ দিয়ে অপ্রত্যক্ষীভূত ঈশ্বরকে অনুসন্ধান বৃথা ।