সাংখ্য দর্শন

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর সাংখ্য দর্শন sankhya dorshon


১। সাংখ্য নামকরণ কেন হয়েছে ? 

উত্তর : ‘সাংখ্য’ নামকরণ কেন হয়েছিল তার সঠিক কারণ নির্ধারণ করা না গেলেও কারও মতে , ‘সাংখ্য ’ কথাটি এসেছে ‘সংখ্যা’ থেকে । তত্ত্বে সংখ্যা নিরূপণের মাধ্যমে তত্ত্বের যথার্থ জ্ঞান লাভ করা যায় — এরূপ চিন্তা থেকেই এই দর্শনের নাম ‘সাংখ্য’ হয়েছে । আবার , অনেকের মতে ‘সাংখ্য’ শব্দের অর্থ ‘সম্যক্ জ্ঞান’। এই দর্শন থেকে সম্যক জ্ঞান হয় বলেই এই দর্শনের নাম সাংখ্যদর্শন । 


২। সাংখ্য - দর্শনের মূল গ্রন্থ কি ? 

উত্তর : সাংখ্য - দর্শনের মূল গ্রন্থ হল কপিলমুনির লেখা ‘সাংখ্য - সূত্র'। এছাড়া সাংখ্যসূত্রের উপর ঈশ্বরকৃষ্ণের লেখা ‘সাংখ্য - কারিকা’কে প্রথম প্রামাণিক শাস্ত্র বলে মনে করা হয় । পরবর্তীকালে আরও অনেক গ্রন্থ রচিত হয়েছে , যেমন — বাচস্পতি মিশ্রের সাংখ্যতত্ত্বকৌমুদী , বিজ্ঞানভিক্ষু সাংখ্যপ্রবচন ভাষ্য , অবিরুদ্ধ ভট্টের সাংখ্য প্রবচন , সূত্রবৃত্তি । 

৩। সাংখ্যের মূল তত্ত্ব কয়টি ও কি কি ? 

উত্তর : সাংখ্য দর্শনে মােট ২৫ টি তত্ত্ব স্বীকৃত হলেও মূল তত্ত্ব দুটি । যথা — প্রকৃতি ও পুরুষ ।


৪। সাংখ্যদর্শনে প্রকৃতির স্বরূপকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে । 

উত্তর : সাংখ্যদর্শনে প্রকৃতির যে লক্ষণ করা হয়েছে , “সত্ত্ব রজোতমসাং সাম্যাবস্থা প্রকৃতিঃ” — অর্থাৎ প্রকৃতি হল সত্ত্ব , রজঃ ও তমােগুণের সাম্যাবস্থা । 


৫। পরিণামবাদ কি ? 

উত্তর : পরিণামবাদ হল কার্যকারণ বিষয়ক সৎকার্যবাদেরই একটি রূপ । যেখানে বলা হয় কারণটিই কার্যে পরিণামপ্রাপ্ত হয় বা পরিণত হয় । ফলে , কার্যটি হল কারণের পরিণাম । যেমন — জগৎ সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রকৃতিই জগৎ রূপে পরিণামপ্রাপ্ত হয় । অর্থাৎ জগৎ হল প্রকৃতির পরিণাম ।  


৬। বিবর্তনবাদ কি ? 

উত্তর : বিবর্তনবাদ হল কার্যকারণ বিষয়ক বেদান্তী মত । বিবর্তনবাদ অনুয়ায়ী কার্যটি হল কারণের বিবর্তরূপ । বিবর্তবাদ অনুযায়ী বিবর্তিত জগৎ হল মিথ্যা কার্য । অর্থাৎ ব্রহ্ম সৎ হলেও ব্রহ্মের বিবর্ত - জগৎ হল মিথ্যা কার্য ।

৭। প্রকৃতি ও পুরুষ পরস্পর বিরােধী স্বভাবের হওয়ায় এদের মধ্যে মিলন কিভাবে সম্ভব হয় ? 

উত্তর : প্রকৃতি অচেতন কিন্তু সক্রিয় । অন্যদিকে পুরুষ সচেতন হলেও নিষ্ক্রিয় । তাই, সৃষ্টির সময় প্রকৃতির অভিব্যক্তির জন্য প্রকৃতি যখন পুরুষের সান্নিধ্যে আসে তখন প্রকৃতির মধ্যে সত্ত্ব , রজঃ ও তমঃ গুণের সাম্যাবস্থা বিনষ্ট হয় এবং প্রকৃতির মধ্যে বিকার শুরু হয় । এইভাবে প্রকৃতির পুরুষের সান্নিধ্যে আসাতেই পুরুষ ও প্রকৃতির মিলন সম্ভব হয় । 

৮। আধ্যাত্মিক দুঃখ বলতে কি বােঝায় ? 

উত্তর : সাংখ্য মতে , শারীরিক এবং মানসিক উভয়প্রকার দুঃখকেই আধ্যাত্মিক দুঃখ বলা হয়েছে । বাত , পিত্ত ও শ্লেষ্মর তারতম্যের ফলে জীব যে ব্যাধি বা আঘাত -জনিত দুঃখ ভােগ করে তাই আধ্যাত্মিক দুঃখ । আর , কাম , ক্রোধ , লােভ , মােহ , ভয় , ঈর্ষা প্রভৃতির কারণে জীবের যে দুঃখ হয় তাই মানসিক দুঃখ ।

৯। সাংখ্য দর্শনে মােট কয়টি তত্ত্ব স্বীকৃত হয়েছে ? সাংখ্যদর্শনকে দ্বৈতবাদী দর্শন বলা হয় কেন ? 

উত্তর : সাংখ্যদর্শনে মােট ২৫ টি তত্ত্ব স্বীকৃত হয়েছে । সাংখ্যদর্শনে মােট ২৫ টি তত্ত্ব স্বীকৃত হলেও সাংখ্য দর্শনকে দ্বৈতবাদীদর্শন বলা হয় । কারণ , সাংখ্যদর্শনের মূলতত্ত্ব দুটি — পুরুষ ও প্রকৃতি ।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন