অনুমানের সাধ্য পক্ষ ও হেতুর ধারণাটি ব্যাখ্যা কর ।

অনাস পাস দর্শন honours pass general philosophy অনুমানের সাধ্য পক্ষ ও হেতুর ধারণাটি ব্যাখ্যা কর anumaner saddho pokkho o hetur dharonati bakkha koro questions answers


উত্তর : সাধারণতঃ অনুমানের বাক্যগুলিতে মােট তিনটি পদ থাকে । এই তিনটি পদকে বােঝাতেই সাধ্য , পক্ষ ও হেতু তিনটি শব্দ ব্যবহার করা হয় । যেমন— ‘পর্বত বহ্নিমান্ ধূমাৎ’ এই অনুমানের তিনটি পদ হল – পর্বত , বহ্নি এবং ধূম  ।

পক্ষ পদ : যে অধিকরণে বা আশ্রয়ে সাধ্যের অস্তিত্বের সংশয় হয় সেটিই পক্ষ । পক্ষপদকে অনুমানের বিষয়ী বলে । পর্বতে ধূম দেখে যখন ঐ পর্বতে বহ্নি আছে কি না এরূপ সংশয় করা হয় তখন পর্বত হয় পক্ষ । অর্থাৎ যেখানে সাধ্যের সংশয় হয় সেটিই পক্ষ । তর্কসংগ্রহে বলা হয়েছে “সন্দিগ্ধ সাধ্যবান্ পক্ষঃ” অর্থাৎ যে অধিকরণে সাধ্যের অস্তিত্বের সংশয় হয় তাই পক্ষ । যে অধিকরণে সাধ্যের অস্তিত্ব বিষয়ে নিশ্চিত জ্ঞান থাকে সেই অধিকরণ বা পক্ষটি সপক্ষ । যেমন - মহানস বা পাকশালা । তেমনি , যে অধিকরণ বা পক্ষে সাধ্যের অভাব নিশ্চিতভাবে জানা থাকে সেই অধিকারণকে বলা হয় বিপক্ষ । যেমন জল , হ্রদাদি । প্রাচীন মতে , সন্দিগ্ধ সাধ্যবান্ অধিকরণই পক্ষ । 


সাধ্যপদ : পক্ষ বা অধিকরণে যার অস্তিত্ব প্রমাণে অনুমান করা হয় সেটিই সাধ্য । অর্থাৎ অনুমানের বিষয়ই সাধ্য । একে অনুমেয়ও বলা হয় । ধূম দেখে বহ্নির অনুমানের ক্ষেত্রে বহ্নি হল অনুমেয় বা সাধ্য পদ । ন্যায়ে বলা হয় “মান্ বাম বর্জিয়া সাধ্য আনাে গর্জিয়া , যদি না থাকে মা বান ‘ত্ব’ দিয়ে সাধ্য আন ।” অর্থাৎ অনুমানের যে পদটির সাথে মান্ বা বান্ শব্দ যুক্ত থাকবে সেই শব্দটি থেকে মান্ বা বান্ অংশ বাদ দিলেই সাধ্যকে পাওয়া যায় । যেমন পর্বত বহ্নিমান্ ধুমাৎ এই অনুমানের ‘বহ্নিমান’ শব্দ থেকে ‘মা’ বাদ দিলে থাকে ‘বহ্নি'। কাজেই , এই অনুমানের সাধ্যপদ বহ্নি । তেমনি , ‘পর্বত ধূমবান্ বহ্নেঃ’ এই অনুমানে সাধ্য পদ হবে ধূম । যেহেতু ধূমের সাথে ‘বান্’ শব্দটি যুক্ত আছে । 


হেতু পদ : পক্ষে সাধ্যে অনুমান যার দ্বারা বা যে কারণ দ্বারা করা হয় তাই হেতু । পর্বতে ধূম দেখে বহ্নির অনুমানের ক্ষেত্রে হেতু হল ধূম । হেতুকে লিঙ্গও বলা হয় । হেতুর কাজ হল একবার সাধ্যের   সাথে আর একবার পক্ষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা । 



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন