কার্য-কারণের ধারণা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে ।

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন প্রশ্নোত্তর কার্যকারণের ধারণা সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখাে karjo karoner dharona somporke songkhepe lekho

উত্তর : এই বিশ্বসংসার ‘কার্য - কারণ শৃঙ্খল’- এ আবদ্ধ । কারণ যা ঘটায় তাকে কার্য বলা হয় । কার্যের আগে যা ঘটে তাকে কারণ বলা হয় । আমরা দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই ‘কারণ’ শব্দের প্রয়ােগ করি । যেমন , আমরা বলি সূর্য পৃথিবীর উত্তাপের কারণ , আগুন দহনের কারণ , জলপান তৃষানিবারণের কারণ  ইত্যাদি । 




অ্যারিস্টটলের মত : অ্যারিস্টটলের পূর্ববর্তী দার্শনিকগণ কারণ বলতে কার্য উৎপাদন করার ক্ষমতা আছে এমন কিছুকে বােঝাতেন । সাধারণভাবে যার দ্বারা কোনাে পরিবর্তনকে ব্যাখ্যা করা যায়, তাকেই কারণ বলা হত । এখান থেকেই অ্যারিস্টটল চারপ্রকার কারণের কথা বলেছেন – নিমিত্ত কারণ , পরিণতি বা উদ্দেশ্য কারণ , আকারগত কারণ এবং উপাদানগত কারণ । 


কারণ ও দ্রব্য : অনেকক্ষেত্রে দ্রব্য বাবস্তুকে কারণ বলা হয় । কিন্তু দ্রব্য বা বস্তুকারণ নয় । কোনাে দ্রব্যের অবস্থার পরিবর্তন বা ঘটনাকে অন্য কোনাে ঘটনার কারণ বলাই সঠিক । কারণ ও কার্য উভয়ই হল দ্রব্যের বাস্তব অবস্থার পরিবর্তন । এই যে পরিবর্তিত অবস্থা , একে ঘটনা বলে । কারণ ও কার্য উভয়ই ঘটনা , কিন্তু দুটি ঘটনার মধ্যে পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণ বলা হয় এবং পরবর্তী বা অনুগামী ঘটনাকে কার্য বলা হয় । 


কারণ ও হেতু : কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে কারণ বলতে হেতুকে বােঝানাে হয় । সেক্ষেত্রে হেতুকে বােঝাতে ‘ কারণ ’ শব্দের ব্যবহার করা হয় । একটি বাক্যের সত্যতা প্রমাণের ক্ষেত্রে এক বা একাধিক যে বচনের বা বচনগুলির কথা বলা হয় সেই সমর্থনকারী বচন বা বচনগুলিকে হেতু বলা হয় । উদাহরণ হিসাবে  ‘অ্যানােফিলিস মশার দংশন থেকে ম্যালেরিয়া রােগ হয়’ – এই বচনটির সত্যতা প্রমাণ করতে গিয়ে আমরা এর সমর্থনকারী অন্যান্য বচনের কথা বলি । যেমন – ( i ) রামকে অ্যানােফিলিস মশার - দংশনের পর রামের ম্যালেরিয়া হয়েছে , ( ii ) শ্যামকেও অ্যানােফিলিস মশার দংশনের পর ম্যালেরিয়া হয়েছে , ( iii ) যদুকেও অ্যানােফিলিস মশার দংশনের পর ম্যালেরিয়া হয়েছে ইত্যাদি । এখানে ( i ) , ( ii ), ( iii ) নং বচনগুলিকে ‘অ্যানােফিলিস মশার দংশন থেকে ম্যালােরিয়া হয়’ – এই বচনের হেতু বলা হয় । 


কারণের বৈশিষ্ট্য : কারণের দুটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে দার্শনিকরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন - ( ১ ) কারণ কার্যের পূর্ববর্তী ঘটনা অর্থাৎ কারণ ও কার্য এই দুটি ঘটনার মধ্যে কারণ পূর্বে ঘটে, কারণ ও কার্যের মধ্যে সময়ের বা কালগত ব্যবধান আছে ।


( 2 ) কারণ ও কার্যের মধ্যে এমন একটি সম্পর্ক আছে যে , কারণ ঘটল অথচ কার্য ঘটল না বস্তুত এমন হয় না । একে বলে অপরিবর্তনীয় সম্পর্ক । আবার , আর একটি বৈশিষ্ট্যের কথা কেউ কেউ বলেন , এটি হল শর্তান্তরহীনতা অর্থাৎ কার্য ঘটার জন্য নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া অন্য কোনাে শর্তের প্রয়ােজন হয় না ।





একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন