বস্তুগত বিবর্তনের দোষ কোথায় তা দৃষ্টান্তসহকারে ব্যাখ্যা করাে ।

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন প্রশ্নোত্তর বস্তুগত বিবর্তনের দোষ কোথায় তা দৃষ্টান্তসহকারে ব্যাখ্যা করাে bostugoto bibortoner dosh kothay ta drishtantsohokare bakkha koro

উত্তর : প্রখ্যাত যুক্তিবিদ বেইন ‘বস্তুগত বিবর্তন’ নামে একপ্রকার বিবর্তনের উল্লেখ করেছেন । এটি আকারগত বিবর্তন থেকে স্বতন্ত্র প্রকারের । আকারগত বিবর্তন বলা হল এই কারণে যে , তা বচনের আকার ( A , E, I ও O- এই আকারের )-এর ওপর নির্ভরশীল এবং এখানে অর্থ জানার দরকার নেই । কিন্তু বস্তুগত বিবর্তনের ভিত্তি হল বাস্তব জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা । এইরূপ বিবর্তনে হেতুবাক্যের তথা আশ্রবাক্যের যে উদ্দেশ্য তার বিপরীত বা বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হিসাবে এবং আশ্রয়বাক্যের যে বিধেয় তার বিপরীত বা বিরুদ্ধ পদকে সিদ্ধান্তের বিধেয়পদ হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে । যথা 


( ক ) শীত হয় কষ্টদায়ক ( বিবর্তনীয় ) । 
উষ্ণতা হয় আরামদায়ক ( বিবর্তিত )। 

( খ ) শান্তি হয় মঙ্গলজনক ( বিবর্তনীয় ) । 
অশান্তি হয় অমঙ্গলজনক ( বিবর্তিত ) । 


এই দুই উদাহরণেই সিদ্ধান্তে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয়ের বিপরীত এবং রুদ্ধপদের ব্যবহার  হয়েছে । 

বস্তুগত বিবর্তনকে যথার্থ বিবর্তন বলা যায় না ।কারণ , এইক্ষেত্রে বিবর্তনের সকল নিয়মকে অনুসরণ করা হয়না – 

( i ) আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য অভিন্ন হবে । কিন্তু বস্তুগত বিবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্যের বিপরীত বা বিরুদ্ধ পদ সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে । 

( ii ) আশ্রয়বাক্যের বিধেয়ের বিরুদ্ধপদ সিদ্ধান্তের বিধেয় হয়ে থাকে । কিন্তু বস্তুগ বিবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যের বিধেয়ের বিপরীতপদও সিদ্ধান্তের বিধেয় হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারে । 
 
( iii ) আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ভিন্ন হবে । কিন্তু বস্তুগত বিবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ অভিন্ন হয় । 

( iv ) বিবর্তন A ,E , I ও O- বচনের আকারের ওপর নির্ভর করে । কিন্তু বস্তুগত বিবর্তন বাস্তব অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল । 

এইসমস্ত কারণ বিবেচনা করে আকারগত যুক্তিবিজ্ঞানে বস্তুগত বিবর্তন হল দোষযুক্ত অনুমান । এই দোষ হল — বস্তুগত বিবর্তনজনিত দোষ ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন