বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বলতে কী বােঝাে ? কেমন করে বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা যায় ।

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন প্রশ্নোত্তর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বলতে কী বােঝাে কেমন করে বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা যায় boigganik bakkha bolte ki bojho kemon kore boigganik o aboigganik bakkhar modhey parthokko nirupon kora jai


উত্তর : ব্যাখ্যা অর্থে - সংজ্ঞা , কোনাে কিছুর বর্ণনা করা । আবার যুক্তি উত্থাপন করাকেও ব্যাখ্যা বলা হয় । প্রকৃতপক্ষে কোনাে ঘটনার বিবরণের মাধ্যমে ব্যাখ্যার বিষয় হিসাবে বােঝা যায় । বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বলতে বােঝায় , কোনাে কিছুকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা কতকগুলি বিবৃতির মাধ্যমে বিষয়টিকে ভালােভাবে বােঝায় চেষ্টা করা হয় ।


যােসেফের এর মতে নিয়ম ও বিশেষ ঘটনা ব্যাখ্যার মধ্যে মূলত কোনাে তফাৎ নেই । ব্যাপকতর নিয়ম থেকেই ব্যাখ্যার নিয়ম আবিস্কার করা হয় । 

অবশ্য ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে যে সমস্ত যুক্তি আমরা গ্রহণ করি একমাত্র হেতুবাক্যে তার ব্যাখ্যা হয় । সমগ্র যুক্তিটি নয় । একথা ঠিক যে , সেক্ষেত্রে প্রকল্পের যাচাইকরণ ও সমর্থনের উপরই ব্যাখ্যার সমর্থন নির্ভর করে । 

ব্যাখ্যা প্রধানত দুরকম - ( ১ ) বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ,( ২ ) অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা । বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বলতে বােঝায় কোনাে কিছু সংগতভাবে ব্যাখ্যা করা । কোনাে নিয়ম বা ঘটনাকে যাচাই করা । 

অপরদিকে অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বলতে বােঝায় অসংগতভাবে ব্যাখ্যা । বিনা বিচারে কোনাে কিছুর সম্বন্ধে কিছু বলা । না জেনে মত প্রকাশ করা । উদাহরণ স্বরূপ ‘প্রবলভাবে বৃষ্টি হলে আমরা বলি প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণ হল দেবতাদের ক্রোধ’ । 



বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মূল পার্থক্য : 

( ১ ) বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হল তথ্যমূলক সুশৃঙ্খলতাপূর্ণ যুক্তিসঙ্গতভাবে কোনাে কিছুর ব্যাখ্যা । অপরদিকে অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হল ভ্রান্ত , অসংগত , অযৌক্তিক নির্বিচার ব্যাখ্যা । 

( ২ ) বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার মূল ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণ পদ্ধতি । অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণের কোনাে রকম স্থান নেই , কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস হল এই ব্যাখ্যার মূল ভিত্তিস্বরূপ । 

( ৩ ) বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যেহেতু যাচাই যােগ্য , সেহেতু তা সর্বজনগ্রাহ্য এবং স্বীকার্য । যেহেতু সেখানাে কোনাে সংস্কার নেই । কিন্তু অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা ব্যক্তিনির্ভর । এর কোনাে মূল ভিত্তি নেই । এ ব্যাখ্যা কোনাে তথ্যের উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে না । সেকারণে এটি সংস্কারপূর্ণ । 

( ৪ ) বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যেহেতু তথ্যভিত্তিক , সেহেতু তার থেকে নিষ্কাষিত অনুকল্পগুলি সত্য বা বৈধ হয় । যেক্ষেত্রে অবৈধ হয় সেক্ষেত্রে পরিস্কারভবে বােঝা যায় যে , তথ্য অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে নিশ্চয় কোনাে নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে । 

অপরদিকে , অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যেহেতু অন্ধবিশ্বাস প্রথার উপর ভিত্তি করে গঠিত সেহেতু তার কোনাে মূল্য নেই । এই ধরণের ব্যাখ্যা থেকে কোনাে বৈধ অনুকল্প নিঃসৃত হতে পারে না । 

পরিশেষে একথাই বলা যায় যে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার তুলনায় অধিক গুরুত্বপূর্ণ । কেননা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার ভিত্তিতে কার্যকারণ সাধারণ নিয়ম আবিষ্কার করা যায় । অবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও উপেক্ষনীয় নয় কেন না এই ব্যাখ্যা না থাকলে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার ধারণা আমাদের হতাে না ।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন