বচনের বিরােধিতা

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর বচনের বিরােধিতা bochoner birodhita


প্রশ্ন । বচনের বিরােধিতা বা বিরূপতা কাকে বলে ? 

উত্তর : যখন দুটি আদর্শ আকারের নিরপেক্ষ বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় এক হয় এবং তাদের মধ্যে গুণের বা পরিমাণের এবং গুণ ও পরিমাণ উভয়েরই পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় তখন তাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে বচনের বিরােধিতা বলে । যেমন — 

A — সব মানুষ হয় দ্বিপদ । 

E — কোনাে মানুষ নয় দ্বিপদ । 


প্রশ্ন । বিরােধিতার শর্তগুলি আলােচনা করাে । 

উত্তর : ( ১ ) দুটি বচনের উদ্দেশ্য, বিধেয়কে এক হতেই হবে । ( ২ ) গুণের পার্থক্য থাকতে হবে । অথবা , পরিমাণের পার্থক্য থাকতে হবে । 
অথবা , গুণ ও পরিমাণের উভয়ের পার্থক্য থাকতে হবে । 

প্রশ্ন । বচনের বিরােধিতা কয় প্রকার ও কী কী ? 

উত্তর : বচনের বিরােধিতা চার প্রকার । যথা — ( ১ ) বিপরীত বিরােধিতা , ( ২ ) অধীন বিপরীত বিরােধিতা , ( ৩ ) অসম বিরােধিতা ( ৪ ) বিরুদ্ধ বিরােধিতা । 

প্রশ্ন । বিপরীত বিরােধিতা বা অতিবিষমতা কাকে বলে ? 

উত্তর : যদি দুটি সামান্য বচনের উদ্দেশ্য এবং বিধেয় এক থাকে কিন্তু কেবলমাত্র গুণের দিক থেকে বচন দুটি পরস্পরের দিক থেকে পৃথক হয় তখন তাকে বিপরীত বিরােধিতা বলে । 

এই বিরােধিতার সম্বন্ধ A এবং E বচনের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়ে থাকে । 

যেমন — A — সব মানুষ হয় দ্বিপদ । 

            E — কোনাে মানুষ নয় দ্বিপদ । 


প্রশ্ন । অধীন বিপরীত বিরােধিতা বা অনুবিষমতা কাকে বলে ? 

উত্তর : যখন দুটি বিশেষ বচনের উদ্দেশ্য এবং বিধেয় এক থাকে কিন্তু কেবলমাত্র গুণের দিক থেকে বচন দুটি পরস্পরের দিক থেকে পৃথক হয়, তখন তাকে অধীন বিপরীত বিরােধিতা বলে ।

প্রশ্ন । স্বতন্ত্রবচন কাকে বলে ? 

উত্তর : যখন দুটি বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় আলাদা হয় কিন্তু তাদের গুণ ও পরিমাণ একই থাকে তখন সেই সম্বন্ধকে স্বতন্ত্র বচন বলা হয় । 

যেমন — A — সকল মানুষ হয় দ্বিপদ । 

              A — সকল দার্শনিক হয় চিন্তাশীল । 


প্রশ্ন । বচনের বিরােধিতা ও চারটি বিরােধিতাকে কী কী ভিন্ন নামে ডাকা হয় ? 

উত্তর : বচনের বিরােধিতা = বচনের বিরুপতা ।  

( ১ ) বিপরীত বিরােধিতা = অতিবিষমতা । 

( ২ ) অধীন বিপরীত বিরােধিতা = অনুবিষমতা । 

( ৩ ) অসম বিরােধিতা = অতিবর্তিতা বা অনুবর্তিতা । 


প্রশ্ন । বিপরীত বিরােধানুমান কাকে বলে ? 

উত্তর : বিপরীত বিরােধানুমান বিপরীত বিরােধিতাকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে । বিপরীত বিরােধিতা যেমন , দুটি সামান্য বচনে উদ্দেশ্য ও বিধেয় এক হলে তাদের মধ্যে গুণের পার্থক্য থাকলে এই সম্বন্ধ গড়ে ওঠে । এই সম্বন্ধ A এবং E বচনের মধ্যে হয় । আর এই দুটি বচনের ভিত্তিতে যে অনুমান করা হয়, তাকে বিপরীত বিরােধানুমান বলে । 


প্রশ্ন । বিপরীত বিরােধানুমানের নিয়মটি লেখাে । 

উত্তর : এখানে সামান্য বচনদ্বয় অর্থাৎ , A এবং E- এর মধ্যে একটি সত্য হলে অপরটি অবশ্যই মিথ্যা হবে । তবে এই বচনদ্বয়ের একটি যদি মিথ্যা হয় অপরটি সত্য হবেই একথা বলা যায় না , অপরটি সংশয়াত্মক হবে । 

A বচন = সত্য [ T ] 

. : . E বচন = মিথ্যা [ F ] 

A বচন = মিথ্যা [ F ] 

.:. E বচন = সংশয়াত্মক [ d ] 


প্রশ্ন । অধীন বিপরীত বিরােধানুমানের নিয়মটি লেখাে । 

উত্তর : অধীন বিপরীত বিরােধিতা ‘I’ এবং ‘O’ মধ্যে সম্বন্ধযুক্ত । এখানে একটি যদি মিথ্যা হয় তাহলে অন্যটি সত্য হবে । কিন্তু এর বিপরীত কথা সত্য একথা বলা যায় না । অর্থাৎ , একটি বচন সত্য হলে অন্যটি সংশয়াত্মক হবে । 

যেমন — I মিথ্যা [ F ] 

             .:. 0 সত্য [ T ] 

             I = সত্য [ T ] 

       .:. 0 = সংশয়াত্মক [ d ] 


প্রশ্ন । অসম বিরােধানুমানের নিয়ম লেখাে । 

উত্তর : ( ক ) যদি সামান্য বচনটি সত্য হয় তাহলে বিশেষ বচনটিও সত্য হবে । কিন্তু উল্টো কথা সত্য নয় । অর্থাৎ , বিশেষ বচনটি সত্য হলে সামান্য বচনটি সংশয়াত্মক হবে । 

( খ ) যদি বিশেষ বচনটি মিথ্যা হয় তাহলে তার অনুরূপ সামান্য বচনটি মিথ্যা হবে । উল্টো কথা সত্যি নয় । অর্থাৎ, সামান্য বচনটি মিথ্যা হবে বিশেষ বচনটি সংশয়াত্মক হবে । 

( ক ) - এর উদাহরণ — A = T / I = T 

                               .:. I = T .:. A = d 

( খ ) - এর উদাহরণ — 0 = F / A = F 

                                   . ' . A = F / O = d 


প্রশ্ন । বিরুদ্ধ বিরােধানুমানের নিয়ম লেখাে । 

উত্তর : দুটি বিরুদ্ধ বচনের একটি যদি সত্য হয় তাহলে অপরটি মিথ্যা হবে এবং একটি যদি মিথ্যা হয় অপরটি সত্য হবে । 
   
       যেমন — A = T / A = F 

                .:. O = F / O = T 
                

প্রশ্ন । বিপরীত বিরােধিতার বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : বিপরীত বিরােধীতার বৈশিষ্ট্যগুলি হল 

( i ) দুটি বচনের উদ্দেশ্য বিধেয় এক হয় । 

( ii ) দুটিই সামান্য বচন । 

( iii ) দুটি বচনের কেবল গুণের পার্থক্য থাকে । 

( iv ) বিরোধানুমানেতে দুটি বচন একই সঙ্গে সত্য হতে পারে না । 


প্রশ্ন । অধীন বিপরীত বিরােধিতার বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : অধীন বিপরীত বিরােধিতার বৈশিষ্ট্যগুলি হল— 

( i ) দুটি বচনের উদ্দেশ্য বিধেয় এক হয় । 

( ii ) দুটি বচনই বিশেষ হয় । 

( iii ) কেবল গুণের পার্থক্য থাকে । 

( iv ) বিরােধানুমানের নিয়ম — একসঙ্গে মিথ্যা হতে পারে না । 

প্রশ্ন । অসম বিরােধিতার বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : অধীন বিপরীত বিরােধিতার বৈশিষ্ট্যগুলি হল— 

( i ) দুটি বচনের উদ্দেশ্য বিধেয় এক হয় । 

( ii ) গুণ অভিন্ন হয় । 

( iii ) পরিমাণ ভিন্ন হয় । 

( iv ) বিরােধানুমানের নিয়ম – সামান্য বচনটি সত্য হলে বিশেষ বচনটিও সত্য হবে । 


প্রশ্ন । বিরুদ্ধ বিরােধিতার বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : বিরুদ্ধ বিরােধিতার বৈশিষ্ট্যগুলি হল — 

( i ) দুটি বচনের উদ্দেশ্য বিধেয় এক হয় । 

( ii ) পরিমাণ ভিন্ন হয় । 

( iii ) গুণও ভিন্ন হয় । 

( iv ) বিরােধানুমানের নিয়ম – দুটি বচন যেমন একই সঙ্গে সত্য হতে পারে না তেমনি একই সঙ্গে মিথ্যাও হতে পারে না ।


প্রশ্ন । বিরুদ্ধ বিরােধানুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : ( ১ ) আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ এক থাকে । ( ২ ) এই অনুমানে দুটি পরস্পর বিরুদ্ধ বচন থাকে । এদের একটি আশ্রয়বাক্য অপরটি সিদ্ধান্ত । 


প্রশ্ন । অসম বিরােধানুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে । 

উত্তর : ( ১ ) আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ এবং সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ অভিন্ন হবে । ( ২ ) পরিমাণের পরিবর্তন হবে । অর্থাৎ , একটি সার্বিক হলে অপরটির বিশেষ হবে । আবার একটি বিশেষ হলে অপরটি সার্বিক হবে ।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন