অসম বিরােধীতাকে কী বিরােধীতা বলা হয় ? অসম বিরােধীতা ও বিরুদ্ধ বিরােধিতার মধ্যে পার্থক্য দেখাও ।

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন প্রশ্নোত্তর অসম বিরােধীতাকে কী বিরােধীতা বলা হয় অসম বিরােধীতা ও বিরুদ্ধ বিরােধিতার মধ্যে পার্থক্য দেখাও asam birodhitake ki birodhita bola hoi asam birodhi o birudho birodhitar modhey parthokko dekhao

উত্তর : কয়েকজন যুক্তিবিজ্ঞানী অসম বিরােধীতাকে বিরােধীতা বলে স্বীকার করেন নি । কারণ 

প্রথমত । তাদের মতে যে বচনগুলির মধ্যে অসম বিরােধীতার সম্পর্ক বর্তমান সেই বচনগুলির মধ্যে কোনাে গুণগত প্রভেদ নেই । 

যেমন – A — সকল মানুষ হয় মরণশীল । 
             I — কোনাে কোনাে মানুষ হয় মরণশীল । 
             
এই দুটি বচনের মধ্যে কোনাে গুণগত প্রভেদ নেই । দুটি বচনই সদর্থক । আবার অনুরূপভাবে বলা যাবে ,

           E — কোনো মানুষ নয় দোষমুক্ত ।

          O — কোনো কোনো মানুষ নয় দোষমুক্ত । 

এই দুটি বচনের মধ্যে কোনাে গুণগত প্রভেদ নেই । উভয়ই নঞর্থক । 

দ্বিতীয়ত । উভয় বচন একই সঙ্গে সত্য কিংবা মিথ্যা হতে পারে । ওপরের উদাহরণ থেকে বােঝা যায় যে , উভয় বচনই একই সঙ্গে সত্য এবং উভয় বচনই একই সঙ্গে মিথ্যা । 

তৃতীয়ত । সামান্য বচনটির সত্যতা অনিবার্যভাবে বিশেষ বচনটির সত্যতা নির্দেশ করে । ‘ সকল মানুষ হয় মরণশীল ’ – এই সামান্য মানচিত্র সত্যতা অনিবার্যভাবে ‘ কোনাে কোনাে মানুষ হয় মরণশীল ’ — এই বিশেষ বচনটির সত্যতা নির্দেশ করে । 

এই কারণেই কয়েকজন যুক্তিবিজ্ঞানী অসম বিরােধীতাকে বিরােধীতা বলে স্বীকার করেন নি । 



সমালােচনা : এর বিরুদ্ধে সমালােচনা করে বলা যায় 

প্রথমত । এই সকল যুক্তিবিজ্ঞানী ‘ বিরােধী ’ শব্দটিকে লৌকিক অর্থে ব্যবহার করেছেন । দুটি বচন একই অর্থে সত্য কিংবা মিথ্যা হয় তাহলে তাদের মধ্যে কোনাে বিরােধ থাকে না । 

দ্বিতীয়ত । লৌকিক অর্থে বচন দুটির মধ্যে গুণগত পার্থক্য থাকা প্রয়ােজন । কিন্তু যুক্তিবিজ্ঞানে আমরা ‘বিরােধ’ শব্দটিকে লৌকিক অর্থে ব্যবহার করি না ।যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত বিরােধ বলতে আমরা বুঝি যে দুটি বচনের একই উদ্দেশ্য এবং বিধেয় থাকলে তাদের সব্য গুণ ও পরিমাণের যে -কোনাে রকমের পার্থক্য থাকতে পারে । যদি গুণগত পার্থক্য না থাকে , কেবলমাত্র পরিমাণ পার্থক্য থাকে তাহলেও তাদের মধ্যে বিরােধিতার সম্বন্ধ থাকে । 

অসম বিরােধিতার ক্ষেত্রে আমরা লক্ষ করেছি যে , বচন দুটির মধ্যে পরিমাণগত পার্থক্য থাকে । সুতরাং , অসম বিরােধিতাকে বিরােধিতা বলে স্বীকার করে নেওয়াই যুক্তিযুক্ত । 

বচনের বিরােধিতা তাে জানলে । কিন্তু বিরােধিতা আমরা পড়বাে কেন ? কারণ একটি বচনের সত্যতা অথবা মিথ্যাত্ব থেকে আমরা তার অনুরূপ বিরােধী বচনটির সত্যতা অথবা মিথ্যাত্ব সম্বন্ধে ধারণা লাভ করবাে । একেই বচনের বিরােধানুমান বলে । 


অসম বিরােধিতা ও বিরুদ্ধ বিরােধিতার মধ্যে পার্থক্য : 


অসম বিরােধিতা বিরুদ্ধ বিরােধিতা
( ১ ) যদি দুটি বচনের উদ্দেশ্য, বিধেয় এবং গুণ একই হয় কিন্তু বচন দুটির মধ্যে পরিমাণগত প্রভেদ থাকে তাহলে বচন দুটির পারস্পরিক সম্পর্ককে অসম বিরােধিতা বলে । A এবং অনুরূপ l বচন আর E এবং অনুরূপ O বচনের যে পারস্পরিক সম্বন্ধতা হল অসম বিরােধিতার সম্বন্ধ ।

A — সকল পলাশ হয় ফুল ।

I — কোনাে কোনাে পলাশ হয় ফুল ।
( ১ ) যদি দুটি বচনের একই উদ্দেশ্য এবং বিধেয় থাকে কিন্তু বচন দুটির গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে পৃথক হয় তাহলে বচন দুটির পারস্পরিক সম্পর্ককে বিরুদ্ধ বিরােধিতা বলে । A এবং অনুরূপ 0 বচন আর E এবং অনুরূপ l বচনের মধ্যে যে পারস্পরিক সম্বন্ধ তা হল বিরুদ্ধ বিরােধিতার সম্বন্ধ ।

A - সকল মানুষ হয় মরণশীল ।
O — কোনাে কোনাে মানুষ নয় মরণশীল ।
( ২ ) এখানে পরিমাণের পার্থক্য দেখা যায় । ( ২ ) এখানে গুণ ও পরিমাণ উভয়ের পার্থক্য দেখা যায় ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন