প্রশ্ন । আরােহ অনুমান বা যুক্তি কাকে বলে ?
উত্তর : একই জাতীয় কয়েকটি বিশেষ বস্তু বা ঘটনার সম্পর্কে পর্যক্ষেণ করে প্রকৃতির একরূপতা নীতির ভিত্তিতে সেই জাতীয় সকল ক্ষেত্র সম্বন্ধে একটা সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করার প্রক্রিয়া হল আরােহ যুক্তি । আরােহ যুক্তিতে আমরা বিশেষ থেকে সামান্যে যাই ।
আরােহ = বিশেষ → সামান্য
উদাহরণ - রাম হয় মরণশীল
শ্যাম হয় মরণশীল
যদু হয় মরণশীল
আজ পর্যন্ত কোনাে অমর মানুষ দেখিনি
. ' . সব মানুষ হয় মরণশীল ।
প্রশ্ন । আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে ।
উত্তর : ( i ) সিদ্ধান্ত সর্বদাই একাধিক যুক্তিবাক্য থেকে নিঃসৃত হতে পারে ।
( ii ) সিদ্ধান্ত যুক্তিবাক্যে নিহিত থাকে না বলে সিন্ধান্ত যুক্তি থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না ।
প্রশ্ন । আরােহ অনুমানকে কয়ভাগে ভাগ করা হয়েছে ও কী কী ?
উত্তর : আরােহ অনুমানকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে । যথা - বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান ও সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান ।
প্রশ্ন । বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান কাকে বলে ?
উত্তর : যে আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে কতকগুলি বিশেষ বিশেষ ঘটনা সংগ্রহ করে প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য কারণ নীতির ওপর বিশ্বাস রেখে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করে তাকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলে ।
প্রশ্ন । অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান কাকে বলে ?
উত্তর : যে আরােহ অনুমানে শুধুমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বা পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে কতকগুলি বিশেষ বিশেষ ঘটনা সংগ্রহ করে প্রকৃতির একরূপতা নীতির ওপর বিশ্বাস রেখে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করে কিন্তু বিষয়ের মধ্যে কার্য-কারণ সম্বন্ধ স্থাপনের কোনাে প্রচেষ্টাই যেখানে করা হয় না , তাকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় ।
প্রশ্ন । আরােহ অনুমান সংক্রান্ত ‘লম্ফন’ কাকে বলে ?
উত্তর : আরােহ অনুমানের প্রধান লক্ষণ হল - জ্ঞাত সত্য থেকে অজ্ঞাত সত্যে , বিশেষ সত্য থেকে সামান্য সত্যে উপনীত হওয়াই হল আরােহ অনুমান সংক্রান্ত লম্ফন ।
প্রশ্ন । আরােহ অনুমানের পূর্ব-স্বীকৃতি কী ?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক অবরােহ অনুমানে দুটি নীতির ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় । এই দুই নীতি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং কার্য- কারণ নীতি । এর ওপর নির্ভর করেই পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সামান্য বচন প্রতিষ্ঠাকরা হয় । এই নীতি দুটির ওপর ভিত্তি করেই ‘অন্ধকারে ঝাপ’ দেওয়া হয় । তাই এই নীতিকে আরােহ অনুমানের পূর্ব-স্বীকৃতি বলে ।
প্রশ্ন । আরােহ অনুমানের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য কোনটি ?
উত্তর : আরােহ অনুমান সংক্রান্ত লম্ফন যাকে যুক্তি বিজ্ঞানী মিল নাম দিয়েছেন ‘অন্ধকারে লাফ বা ঝাপ দেওয়া’ । একে আবার ‘আরােহ অনুমান সংক্রান্ত ঝুঁকি’ বলেও গণ্য করা হয় ।
প্রশ্ন । অবৈজ্ঞানিক অরােহ অনুমানকে গণনামূলক আরােহ অনুমান হলা হয় কেন ?
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘ গণনামূলক আরােহ অনুমান ’ বলা হয় কারণ এখানে কতকগুলি সদর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে বা অবাধ অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একটি সামান্য সিদ্ধান্ত করা হয় । একটা , দুটো , তিনটে - এরূপ কতকগুলি মানুষকে দেখে সিদ্ধান্ত করলাম ‘সকল মানুষ হয় মরণশীল’ ।
প্রশ্ন । আরােহ অনুমানের ভিত্তি কী ?
উত্তর : যার ওপর ভিত্তি করে সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয় তাকেই আরােহ অনুমানের ভিত্তি বলা হয় ।
আরােহ অনুমানের ভিত্তি দু- প্রকার । যথা - আকারগত ও বস্তুগত । আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা এবং কার্য- কারণ নীতি । বস্তুগত ভিত্তি হল - পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ ।
প্রশ্ন । একটি বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের উদাহরণ দাও ।
উত্তর : রবীন্দ্রনাথ হন মরণশীল
বিদ্যাসাগর হন মরণশীল
শরৎচন্দ্র হন মরণশীল
.'. সব মানুষ হয় মরণশীল ।
প্রশ্ন : একটি অবৈজ্ঞানিক অবরােহ অনুমানের উদাহরণ দাও ।
উত্তর : সব কাক কালাে , দুটি কাক কালাে , তিনটি কাক কালাে - এমন কাক দেখিনি যা কালাে নয় ।
.'. সব কাক কালাে ।