দ্রব্য : দ্রব্য সম্পর্কে ডেকার্ত , স্পিনাজো , লক্ ও বার্কলে মতবাদ

Clg philosophy questions answers কলেজ দর্শন অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর  দ্রব্য দ্রব্য সম্পর্কে ডেকার্ত স্পিনাজো লক্ ও বার্কলে মতবাদ drobo somporke dekart spinajo lok o barkole motobad


প্রশ্ন । ‘দ্রব্য’ বা ‘Substance’ বলতে কী বােঝায় ? 

উত্তর : ইংরেজি ‘Substance’ শব্দটি এসেছে লাতিন ‘Substantia’ শব্দ থেকে । এই ‘Substantia’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Hypostatis’- এর আক্ষরিক অনুবাদ – যার অর্থ হল কোনাে কিছুর নীচে থাকা বা কোনাে কিছুকে ধরে রাখা । ইংরেজি Substance , যার প্রতিশব্দ ‘দ্রব্য’ । 


প্রশ্ন । ‘যা স্বনির্ভর তাই দ্রব্য’ – তা ব্যাখ্যা করাে । 

উত্তর : দেকার্ত দ্রব্যের সংজ্ঞা দিয়েছেন এইভাবে – ‘যাকে অস্তিত্বের জন্য নিজের ওপর ছাড়া আর কোনাে কিছুর ওপর নির্ভর করতে হয় না , তাই দ্রব্য’ । অর্থাৎ যা স্বনির্ভর তাই দ্রব্য ।

প্রশ্ন । হিউমের মতে , দ্রব্য কী ? 

উত্তর : হিউমের মতে , প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে যাকে পাওয়া যায় না ,তার অস্তিত্ব তিনি স্বীকার করেন না । হিউমের মতে , জড়দ্রব্য হল ‘কতকগুলি গুণের সমষ্টি ।’ 

প্রশ্ন । অ্যারিস্টটলের মতে , দ্রব্য কী ? 

উত্তর : অ্যারিস্টটলের মতে , দ্রব্য হল – ( ১ ) সমস্ত গুণ ও ক্রিয়ার আধার । ( ২ ) দ্রব্য হল বাক্যের উদ্দেশ্য , বিধেয় নয় । 

প্রশ্ন । অ্যারিস্টটলকে অনুসরণ করে ‘দ্রব্য’ শব্দের যে -কোনাে দুটি অর্থ লেখাে । 

উত্তর : অ্যারিস্টটলের মতে , দ্রব্যহল – ( ১ ) সমস্ত গুণ ও ক্রিয়ার আধার , ( ২ ) যা স্থায়ী হবার জন্য কোনাে কিছুর ওপর নির্ভর করেনা তাই দ্রব্য । 

প্রশ্ন । বার্কলে কেন জড় দ্রব্যকে স্বীকার করেননি ? 

উত্তর : বার্কলের মতে , অস্তিত্ব প্রত্যক্ষ-নির্ভর, যা ইন্দ্রিয় প্রত্যক্ষে ধরা পড়ে না তার কোনাে অস্তিত্ব নেই । তাই দ্রব্যের অস্তিত্ব তিনি স্বীকার করেননি । 

প্রশ্ন । নামপদ কি দ্রব্যের সঙ্গে সম্পর্কিত ? 

উত্তর : নামপদ হল কোনাে বাক্যের উদ্দেশ্য , বিধেয় নয় । নামপদের সাহায্যে দ্রব্যকে জানতে পারি । 

প্রশ্ন । সাধারণ মতে , দ্রব্য কী ? 

উত্তর : দ্রব্য হল পরিবর্তনের মধ্যেও অপরিবর্তনীয় বস্তুর সত্তা ।

প্রশ্ন । দ্রব্যের অস্তিত্বের সপক্ষে দুটি যুক্তি দাও । 

উত্তর : দ্রব্যের অস্তিত্বের সপক্ষে দুটি যুক্তি হল : ( ১ ) বস্তু হচ্ছে গুণ + দ্রব্য । গুণ সর্বদা কোনাে কিছুকে আশ্রয় করে অবস্থান করে । দ্রব্য হল বিভিন্ন গুণের আধার । ( ২ ) বস্তুর কোনাে একটা গুণের পরিবর্তন হলে তাকে সাধারণত বস্তুর পরিবর্তন বলা হয় না ।


প্রশ্ন । দ্রব্যের বিভিন্ন অর্থ কী ? 

উত্তর : অ্যারিস্টটল যে বিভিন্ন অর্থে দ্রব্য কথাটি ব্যবহার করেছেন , বিভিন্ন দার্শনিকের রচনায় তার প্রায় সব কটিই পাওয়া যায় । দ্রব্যের বিভিন্ন অর্থ হল :  ( ১ ) দ্রব্য স্বনির্ভর, অর্থাৎ যা অন্যের ওপর নির্ভরশীল নয় । ( ২ ) দ্রব্য হল পরিবর্তনের কেন্দ্র বা উৎস । 

প্রশ্ন । দ্রব্য বলতে বুদ্ধিবাদীরা কী বােঝেন ? 

উত্তর : যার স্বাধীন সত্তা আছে , যার অস্তিত্ব অন্য কোনাে কিছুর ওপর নির্ভর করে না , বুদ্ধিবাদীরা তাকেই দ্রব্য বলেন ।

প্রশ্ন । লাইবনিজের মতে , সৃষ্ট মনাডগুলি কতপ্রকার ও কী কী ? 

উত্তর : লাইবনিজের মতে , সৃষ্ট মনাডগুলি তিনপ্রকার । তা হল – ( ক ) অচেতন মনাড , ( খ ) চেতন মনাড ও ( গ ) আত্মসচেতন মনাড । 

প্রশ্ন । স্পিনােজার মতে , ঈশ্বরের গুণ কতপ্রকার ও কী কী ? 

উত্তর : স্পিনােজার মতে , ঈশ্বরের অসীম ও অনন্ত সংখ্যক গুণ আছে । কিন্তু মানুষ কেবল চিন্তন ও বিস্তৃতি এই দুটি গুণকে জানতে পারে । 

প্রশ্ন । লাইবনিজের প্রদত্ত দ্রব্যের নাম কী? 

উত্তর : লাইবনিজের প্রদত্ত দ্রব্যের নাম মনাড বা চিৎপরমাণু । 

প্রশ্ন । দেকার্তের মতে , মনের সারসত্তা বা সারধর্ম কী ? 

উত্তর : দেকার্তের মতে , মনের সারসত্তা বা সারধর্ম হল চেতনা ( চিন্তন ) । 

প্রশ্ন । স্পিনােজা কতপ্রকার দ্রব্য স্বীকার করেছেন ও কী কী ? 

উত্তর : স্পিনােজা একটিমাত্র দ্রব্য স্বীকার করেছেন , তা হল – ঈশ্বর । 

প্রশ্ন । দেকার্তের মতে , জড়দ্রব্যে সারসত্তা বা সারধর্ম কী ? 

উত্তর : দেকার্তের মতে জড়দ্রব্যের সারসত্তা বা সারধর্ম হল বিস্তৃতি । 

প্রশ্ন । স্পিনােজার মতে , বিস্তৃতি ও চিন্তন গুণ দুটি কী প্রত্যক্ষগ্রাহ্য ? 

উত্তর : স্পিনােজার মতে নিছক গুণ — বিস্তৃতি ও চিন্তন প্রত্যক্ষগ্রাহ্য নয় । প্রত্যংশের মাধ্যমে জ্ঞাত হয় । 

প্রশ্ন । লাইবনিজের মতে মনাডের ( দ্রব্যের ) বৈশিষ্ট্যগুলি কী ?  

উত্তর : মনাড হল – আত্মসক্রিয় , নিরংশ , অবিভাজ্য , বিস্তৃতিহীন , আধ্যাত্মিক সত্তা , জড় নয় , অবিনশ্বর , তাত্ত্বিক বিন্দু , অদৈশিক , অকালিক , গবাক্ষহীন , ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ প্রতিফলনক্ষণ বস্তু । 
    
প্রশ্ন । লক কেন জড় দ্রব্য স্বীকার করেছেন ? , 

উত্তর : আয়তন , আকার , বিস্তৃতি প্রভৃতি মুখ্যগুণের আধার লক্ জড়দ্রব্য স্বীকার করেছেন ।  

প্রশ্ন । লাইবনিজের মতে , সমগ্র বিশ্ব কী দিয়ে তৈরি ? 

উত্তর : লাইবনিজের মতে সমগ্র বিশ্ব অসংখ্য চিৎপরমাণু বা মনাড দিয়ে তৈরি । 

প্রশ্ন । লকের মতে দ্রব্যকে কী প্রত্যক্ষ করা যায় ? 

উত্তর : লকের মতে দ্রব্যকে প্রত্যক্ষ করা যায় না , গুণের আধার হিসাবে দ্রব্যকে অনুমান করা হয় ।

প্রশ্ন । দেকার্ত ঈশ্বরের সঙ্গে জড় ও আত্মদ্রব্যের মধ্যে সম্পর্ক কীভাবে ব্যাখ্যা করেছেন ? 

উত্তর : ঈশ্বর জড় ও আত্মদ্রব্য সৃষ্টি করেছেন । তাই এদের মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধ রয়েছে । 

প্রশ্ন । দেকার্ত জড় ও আত্মাকে দ্রব্য বলেছেন কেন ? 

উত্তর : দেকার্তের মতে গুণের আধার দ্রব্য । তাই বিস্তৃতি গুণের আধার হিসাবে জড়দ্রব্য ও চিন্তন গুণের আধার হিসাবে আত্মদ্রব্য স্বীকার করেছেন । 

প্রশ্ন । বহুত্ববাদী দার্শনিকের নাম লেখাে । 

উত্তর : লাইবনিজ বহুত্ববাদী দার্শনিক , কারণ তিনি বহুদ্ৰব্য স্বীকার করেছেন । 

প্রশ্ন । কোন্ অভিজ্ঞতাবাদী দার্শনিক জড়দ্রব্য অস্বীকার করেছেন । 

উত্তর : বার্কলে জড়দ্রব্যের অস্বীকার করেছেন । 

প্রশ্ন । ‘আত্মদ্রব্য আছে কিন্তু জড়দ্রব্য নেই’ - একথা কে বলেছেন ? 

উত্তর : আত্মদ্রব্য আছে কিন্তু জড়দ্রব্য নেই , একথা বলেছেন বার্কলে । 

প্রশ্ন । হিউমের মতে জড়দ্রব্য কী ? 

উত্তর : হিউমের মতে জড়দ্রব্য হল গুণের সমষ্টি । 

প্রশ্ন । দ্রব্য সম্বন্ধে স্পিনােজা ও লাইবনিজের বক্তব্যের মধ্যে পার্থক্য কী ? 

উত্তর : স্পিনােজার মতে , দ্রব্য স্বনির্ভর ও এক ।অপরপক্ষে লাইবনিজের মতে দ্রব্য আত্মসক্রিয় ও বহু । 

প্রশ্ন । সাধারণ মতে দ্রব্য কী ? 

উত্তর : সাধারণ মতে দ্রব্য হল গুণের আধার । 

প্রশ্ন । দ্রব্য কীসের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করে ? 

উত্তর : দ্রব্য গুণের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করে ।






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন