উত্তর : ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার জন্য গান্ধীজি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন সেই সত্য ও অহিংসার নীতিকে তিনি হাতিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন । সত্য ও অহিংসা যে একটি ধারালাে অস্ত্র তা গান্ধীজি বিশ্বাস করতেন না । বিশ্বাসের পক্ষে যে যুক্তিগুলি দেখিয়েছিলেন —
প্রথমত : গান্ধীজির মতে হিংসার দ্বারা হিংসাকে জয় করা যায় না । তিনি বলতেন শত্রুকে নিধনের জন্য যে তলােয়ার তুমি ব্যবহার করবে সেই তলােয়ারই তােমার মৃত্যু ঘটাবে । তাই অহিংসাই শ্রেষ্ঠ অস্ত্র।
দ্বিতীয়ত : হিংসার মধ্যে দিয়ে প্রতিহিংসা জাগ্রত হয়ে ওঠে । তাই হিংসা কখনও হিংসার বিরুদ্ধে অস্ত্র হতে পারে না ।
তৃতীয়ত : হিংসা দিয়ে হিংসাকে সাময়িক দমিয়ে রাখা যায় । সাময়িক দমিয়ে রাখা গেলেও প্রতিপক্ষ প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে । তাই তিনি অহিংসার নীতি গ্রহণ করতে বলেছিলেন ।
চতুর্থত : গান্ধীজি বিশ্বাস করতেন অহিংসা সমস্ত কিছুকে জয় করতে পারে । এমনকি হিংসাকেও অহিংসার দ্বারা জয় করা যায় ।
পঞমত : গান্ধীজির মতে মিথ্যাচার ও হিংসার দ্বারা ন্যায় ও সত্যের মন্দির স্থাপন করা যায় না । কারণ এরা মানুষের মধ্যে বিচ্ছিন্নতার ভাব জাগিয়ে তােলে । তাই সত্য অহিংসা ও প্রেমের বন্ধনে মানুষকে আবদ্ধ করলেই প্রকৃত ঐক্য গড়ে উঠবে ।
ষষ্ঠত : গান্ধীজির মতে হিংসা মানুষের একটি পাশবিক গুণ । এর দ্বারা আত্মােপলব্ধিই ঘটে না, ঈশ্বরকে পাওয়ার পথও প্রশস্থ হয় না ।
সপ্তমত : গান্ধীজি মনে করতেন অহিংসা মানে আনুগত্য স্বীকার করা নয় । অহিংসার মধ্যে আছে সহনশীলতা , ধৈৰ্য্য আত্মােৎসর্গ , প্রভৃতি মানবীয় গুণ । অহিংসা এবং প্রেম । কাজেই , জীবকে হিংসা করার অর্থ ঈশ্বরের প্রতি হিংসা করা । এর দ্বারা নিজেকেই ছােট করা হয় । কাজেই সমস্ত সমাধান করতে হবে সত্য ও অহিংসার পথেই ।