উত্তর : বৈশেষিক মতে সামান্য একটি স্বতন্ত্র ভাব পদার্থ । এক জাতীয় অনেক বস্তুর মধ্যে যা সাধারণ ধর্ম তাই সামান্য । যেমন — গােত্ব, ঘটত্ব মনুষ্যত্ব ইত্যাদি । সামান্য নিত্য হওয়ায় সামান্যের উৎপত্তি ও বিনাশ নেই । সমস্ত বিশেষ বস্তুগুলি ধ্বংস হলেও সামান্য ধ্বংস হয় না । সামান্য তখন কালে অবস্থান করে । সামান্যের পরিমাণের হ্রাস বৃদ্ধি হয় । যার হ্রাস বৃদ্ধি হয় সর্বত্রই বিশেষ বস্তু । বিশেষের সংখ্যার বৃদ্ধিতে সামান্যের বৃদ্ধি হয় না । ‘তর্ক সংগ্রহ’ গ্রন্থে অন্নভট্ট সামান্যের লক্ষণ করেছেন - “নিত্যমেকং অনেক সমবেতত্বম্” অর্থাৎ সামান্য পদার্থ হল নিত্য, এক এবং অনেকের মধ্যে সমবায় সম্বন্ধে থাকে । সামান্যের আর সামান্য থাকে না । যেমন— ঘট এর সামান্য ঘটত্ব হলেও ‘ঘটত্বত্ব’ ঘটত্বের সামান্য নয় ।
সামান্যকে জাতিও বলা হয় । অবশ্য সামান্য ও জাতি এক ও অভিন্ন নয় । কারণ , সামান্য মাত্রই জাতি নয় , কিন্তু জাতিমাত্রই সামান্য । আসলে , জাতি ও উপাধি ভেদে কিন্তু অন্ধত্ব বধিরত্ব হল উপাধি , জাতি সামান্য , সামান্য দু’প্রকার । যেমন — মনুষ্যত্ব এটি সামান্য । একটি অন্ধত্ব, বধিরত্ব হল উপাধি, জাতি নয় । সামান্য একটি স্বতন্ত্র পদার্থ হলেও এটি বিশেষের মাধ্যমেই প্রকাশিত হয় । তাই , বিশেষকে বাদ দিয়ে সামান্যকে জানা যায় না ।
সামান্য তিন প্রকার – পর , অপর , এবং পরাপর সামান্য । যে সামান্যে ব্যাপকতা এতই বেশি যে সবকিছুকেই সে নিজের অন্তর্ভুক্ত করে সেই সামান্যই – পরসামান্য । যেমন- সত্তা । যে সামান্যের ব্যাপকতা এতই কম যে কেবলমাত্র নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ । সেই সামান্যই অপর সামান্য । যেমন — ঘটত্ব । আর , যে সামান্য পর সামান্য অপেক্ষা কম ব্যাপক কিন্তু অপর সামান্য অপেক্ষা বেশি ব্যাপক তাই পরাপর সামান্য । যেমন — দ্রব্যত্ব । এটি ঘটত্ব — এই অপর সামান্য অপেক্ষা বেশি ব্যাপক আর পর সামান্য সত্তা অপেক্ষা কম ব্যাপক । পরাপর সামান্যকে সামান্য বিশেষও বলা হয় ।