উত্তর : সাংখ্য মতে , বিচিত্র জগৎ যার পরিণাম তিনিই প্রকৃতি । কাজেই প্রকৃতি হল জগতের উপাদান কারণ । কিন্তু কার্য নয় । অভিব্যক্তির মাধ্যমে যে অব্যক্ত কারণ বা উৎস থেকে জগৎ সৃষ্টি, সেই অব্যক্ত বা প্রধানই প্রকৃতি । পুরুষ কোন কিছুর কারণ বা পরিণাম নয় । যেহেতু পুরুষ নিত্য ও চৈতন্যস্বরূপ । মহৎ থেকে ২৩ পদার্থ সবই ব্যক্ত। ব্যক্ত পদার্থ মাত্রেরই উপাদান কারণ আছে । কিন্তু অব্যক্ত প্রকৃতি এর বিপরীত । তাই , প্রকৃতি কেবলমাত্র কারণ কার্য নয় । প্রকৃতি নিজে অকারণ , নিত্য ,সর্বব্যাপী ,নিষ্ক্রিয়, এবং আলিঙ্গ , নিরবয়ব,ও স্বতন্ত্র । একে কেবল অনুমানের দ্বারাই জানা যায় ।
প্রকৃতির ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে “প্ৰ-করােতি ইতি প্রকৃতি” এই বিশ্ব যার কৃতি তিনিই প্রকৃতি । প্রকৃতি হল জগতের চরম কারণ । যার আর কোন কারণ নেই । তাই প্রকৃতি হল কারণহীন কারণ । প্রকৃতিই হল আদি উপাদান । যেহেতু প্রকৃতির কারণ মানলে তারও আবার কারণকে মানতে হয় এবং এইভাবে কারণ পরম্পরায় অবস্থা দোষ হয় । প্রকৃতি এক , বিভু ও সর্বব্যাপী । সৃষ্টির পূর্বে প্রকৃতি অব্যক্ত অবস্থায় ছিল এজন্য প্রকৃতিকে অব্যক্ত বলা হয় । এই অব্যক্ত অবস্থার নামই প্রকৃতি । প্রকৃতিকে প্রধানও বলা হয় । ‘প্রধান’ হল প্র-ধা+অনট অর্থাৎ প্ৰধীয়তে অস্মিন ইতি প্রধান । প্রলয়ের পর সমস্ত জগৎ প্রকৃতিতে বিলীন হয় বলেই প্রকৃতিকে প্রধান বলে । যা কিছু ব্যক্ত সবই প্রলয়ের সময় সঙ্কুচিত হয়ে প্রকৃতিতে অব্যক্ত হয় । কিন্তু প্রকৃতির লয় নেই । যেহেতু প্রকৃতি অলিঙ্গ । অর্থাৎ প্রকৃতি কারও কার্য নয় । ফলে প্রকৃতি অবিনাশী ও নিত্য ।